বাংলাভাষার প্রথম অক্ষরশিল্পীর নাম পঞ্চানন কর্মকার।যদিও বাংলা মুদ্রণযোগ্য সামঞ্জস্যপূর্ণ হরফছাঁদ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল বৃটিশরা, মূলতঃ ধর্মপ্রচার, বানিজ্য ও শাসনের জন্য।ন্যাথানিয়াল ব্রাসো হালহেড ও চার্লস উইলকিন্সছিলেন অগ্রনী। কিন্তু সুসমঞ্জস শৈল্পিক হরফছাঁদ নির্মাণের অক্ষরশিল্পী পঞ্চানন কর্মকারের নাম অনুল্লেখ থেকেগেল সচল-হরফ নির্মাণেরইতিহাসে।
শিল্পীপঞ্চানন ১৭৭৫ থেকে ১৭৭৮সাল অবধি সারাদিন ওরাত এক করে বাংলাভাষার হরফছাঁদ ( পাঞ্চ) তৈরি করে গেছেন।১৭৭৮ সালে ন্যাথানিয়াল ব্রাসোহালহেড লিখিত A Grammar Of Bengali
Language বইতে ছাপা হল প্রথমবাংলা সুসমঞ্জস হরফছাঁদ। বইয়ের কোথাও উল্লেখ করা হলো নাঅক্ষরশিল্পী পঞ্চানন কর্মকারের নাম। চার্লস উইলকিন্সেরনাম প্রচারে এলো। পঞ্চানন কর্মকারহার না মানা একঅনন্য শিল্পীকে চিনেছিলেন উইলিয়াম কেরি।
কেরিনিয়ে আসেন পঞ্চানন কর্মকারকেবৃটিশদের খপ্পর থেকে শ্রীরামপুর মিশনপ্রেসে। পঞ্চানন কর্মকার আরও শৈল্পিক ওসুন্দর করে তুলেছেন বাংলাহরফ যা পরবর্তীতে বিদ্যাসাগরএসে সংস্কার করে আমাদের হাতেতুলে দিলেন ‘বর্ণপরিচয়’ (১৮৫৫)। কিন্তু আড়ালেচলে গেল এক লড়াকুঅক্ষরশিল্পীর লড়াই করার কথা। আজযখন চারপাশে ইতিহাসকে ভুলিয়ে দেওয়ার নয়া-ইতিহাস নির্মাণেরচেষ্টা চলছে তখন বাঙালিহিসেবে বাংলা ভাষার এক অক্ষরশিল্পীর আখ্যানকেমঞ্চে আনা খানিকটা দায়আমাদের। শ্রদ্ধা জানানোও বটে।
রজতচক্রবর্তীর উপন্যাস ‘পঞ্চাননের হরফ’আধারিত দেবাশিসের নাট্যনির্মাণে অনীক প্রযোজনা ‘আক্ষরিক’আজকেরবিপন্ন বাংলা ভাষাকে বাঙালির সামনে তুলে ধরার একটাদায়িত্ব পালন মাত্র।